ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত, পশ্চিমবঙ্গ সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি, ঐতিহাসিক তাৎপর্য এবং বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্যের মিশ্রণের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। এই রাজ্যের উৎপত্তি এবং বিবর্তন একটি রচিত আখ্যানকে আচ্ছন্ন করে যা এর গঠন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সামাজিক-রাজনৈতিক দিকগুলিকে জড়িত করে।
20 শতকের গোড়ার দিকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি কেন্দ্রস্থল হল পশ্চিমবঙ্গ।1947 সালে ভারতের স্বাধীনতার সময় বাংলাকে দুইটি পৃথক ধর্মীয় সত্তায় বিভক্ত করা হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ-ভারতের একটি রাজ্য-এবং পূর্ববঙ্গ-পাকিস্তানের সদ্য সৃষ্ট ডোমিনিয়নের একটি অংশ। যা পরবর্তীতে স্বাধীন জাতিতে পরিণত হয়।
পশ্চিমবঙ্গের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে প্রথমে আমাদের পশ্চিমবঙ্গ কিভাবে নামকরণ হল সেটি সম্পর্কে জানতে হবে। গঙ্গানদী যেখানে সাগরে মিশেছে, সেখানে গঙ্গারিডি বা গঙ্গারিডাই নামে প্রাচীন এক সভ্যতা ছিল। গ্রিকদের রচনা থেকে সে কথা জানা যায়। কিন্তু তা থেকে কী ভাবে বঙ্গ ও বাংলা নাম এল সে সম্বন্ধে স্পষ্ট করে কিছু এখনও জানা যায়নি। দক্ষিণ ভারতের একটি জনজাতি, যারা এখন অধুনা ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা তাদের সূর্যের দেবতা সিঙ্গ বঙ্গা , তা থেকে বঙ্গ নামের উৎপত্তি হয়ে থাকতে পারে। আবার আর্যদের রচনা অনুযায়ী রাজা বলি এই রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গ নামের উল্লেখ রয়েছে এমন প্রাচীন লিপিটি মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরে পাওয়া গিয়েছে। আটশো খ্রিস্টাব্দে সেই নথিটি উৎকীর্ণ হয়েছিল বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা।সামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ 1352 খ্রিস্টাবে বাংলার শাসক হন তখন তিনি শাহ-ই-বাংলা উপাধি ধারণ করেছিলেন।বাংলা সাহিত্যে বারে বারে অবিভক্ত ভূখন্ডের নাম বাংলা ও বাংলাদেশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত আমার “সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি”তেও এই ভূখণ্ডকে বাংলা নামে ডাকা হয়েছে। আবার সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘বাংলাদেশ’ কবিতাতেও অখণ্ড ভূখণ্ডকেই বাংলাদেশ ও বাংলা বলে ছত্রে ছত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।1905 সালে বঙ্গবঙ্গ হলেও তা স্থায়ী হয়নি। 1947 সালে দেশ ভাগের সময় পশ্চিমাংশের নাম হয় পশ্চিমবঙ্গ, পূর্ব অংশের নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান। 1971সালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠিত হয়, ইতিহাস হয়ে যায় পূর্ব পাকিস্তান। দেশ ভাগের সেই স্মৃতি আজও বহন করে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ নাম।1905সালের ইতিহাস মেনেই বঙ্গভূমির একাংশের নাম হয় পশ্চিমবঙ্গ, ইংরেজিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল।রাজধানীর নাম বদলে ইংরেজিতে ক্যালকাটা থেকে কলকাতা হলেও, রাজ্যের নাম বদল করা হয়নি। রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব হয়েছিল 1990-এর দশকের শেষ দিকে। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। 2011 সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের ইংরাজি নামটি পালটে ‘Paschimbanga’ রাখার প্রস্তাব দেয়।2016 সালে তৃণমূল সরকার নাম বদলের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু রাজ্যের তিন নাম নিয়ে (বাংলা, বেঙ্গল ও বঙ্গাল) আপত্তি ছিল বামফ্রন্টের। কেন্দ্রীয় সরকারও একই ভাবে আপত্তি করে সেই নাম বদলের প্রস্তাব খারিজ করে দেয়।পরবর্তীকালে ভারত সরকার তিনটির পরিবর্তে একটি মাত্র নাম নির্ধারণের পক্ষে পরামর্শ প্রদান করে।এই পরামর্শ অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় 2018 সালের 26শে জুলাই সকল ভাষার জন্য ‘বাংলা’ নামটিই সর্বসম্মত ভাবে পাশ হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে নামবদলের প্রস্তাব রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যকর হবে।
পশ্চিমবঙ্গের উৎপত্তি ঔপনিবেশিক যুগে ফিরে পাওয়া যায় যখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আঞ্চলিক সম্প্রসারণের ফলে বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ এবং বিহার ও ওড়িশার কিছু অংশকে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাকে একীভূত করা হয়।
লর্ড কার্জনের 1905 সালে বঙ্গভঙ্গ ছিল একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক, যা বাংলাকে পূর্ববঙ্গ এবং আসাম এবং বাকি বাংলায় বিভক্ত করে, সামাজিক-রাজনৈতিক উত্থান এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে উত্সাহিত করে।
1947 সালে, ভারতের স্বাধীনতা এবং পরবর্তী বিভাজনের সাথে, পশ্চিমবঙ্গ একটি পৃথক সত্তা হিসাবে আবির্ভূত হয়, যা পূর্ববঙ্গ, এখন বাংলাদেশ থেকে উদ্বাস্তুদের আগমন দেখে, যা জনসংখ্যাগত পরিবর্তন এবং সামাজিক চ্যালেঞ্জের দিকে পরিচালিত করে।
1950-এর দশকে বাংলাকে সরকারী ভাষা হিসাবে ওকালতি করার ভাষাগত আন্দোলন, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি এবং পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে আরও সুসংহত করে।
পশ্চিমবঙ্গের লোকশিল্প, সঙ্গীত, নৃত্য, সাহিত্য এবং দুর্গাপূজার মতো উৎসবের মাধ্যমে প্রদর্শিত একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গর্ব, যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত একটি প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক ল্যান্ডস্কেপকে লালন করে।
রাজ্যটি একটি রাজনৈতিক স্নায়ু কেন্দ্র, আন্দোলন এবং পরিবর্তনের সাক্ষী, ভারতের রাজনৈতিক বর্ণালীতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, প্রায়শই জাতীয় নীতিগুলিকে প্রভাবিত করে।
পশ্চিমবঙ্গের ঔপনিবেশিক অতীত থেকে স্বাধীন ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠার যাত্রা হল স্থিতিস্থাপকতা, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি এবং সামাজিক-রাজনৈতিক গতিশীলতার গল্প। অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক অগ্রগতির জন্য প্রচেষ্টা করার সময়, ভারতীয় রাজ্যগুলির মোজাইকগুলিতে তার স্বতন্ত্র পরিচয় বজায় রেখে রাজ্যটি তার ঐতিহ্যকে আলিঙ্গন করে বিবর্তিত হতে থাকে।
Adda247 ইউটিউব চ্যানেল – Adda247 YouTube Channel
Adda247 টেলিগ্রাম চ্যানেল – Adda247 Telegram Channel
পশ্চিমবঙ্গ হল ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম চা উৎপাদনকারী রাজ্য এবং বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত দার্জিলিং চায়ের জাত।
কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী।
বাংলা রাজ্যের প্রধান ভাষা, জনসংখ্যার বেশিরভাগ দ্বারা কথা বলা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎসব হল দুর্গাপূজা।
WBPSC Miscellaneous Cut-Off Marks 2024 WBPSC Miscellaneous Cut-Off Marks 2024: West Bengal Public Service Commission…
ADDAPEDIA West Bengal- Daily Current Affairs ADDAPEDIA West Bengal- Daily Current Affairs: Current affairs are…
WBPSC Miscellaneous Syllabus WBPSC Miscellaneous Syllabus: The West Bengal Public Service Commission(WBPSC) Conducts WBPSC Miscellaneous…
WBPSC IDO নিয়োগ 2024 WBPSC IDO নিয়োগ 2024: WBPSC, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট অফিসার নিয়োগের জন্য WBPSC…
SSC CHSL যোগ্যতা SSC CHSL যোগ্যতা: SSC CHSL যোগ্যতা যেমন প্রার্থীর বয়স এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা…
WBPSC হেড মাস্টার এবং হেড মিস্ট্রেস নিয়োগ 2024: ওয়েস্ট বেঙ্গল পাবলিক সার্ভিস কমিশন(WBPSC), পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন…