Five Year Plans Of India
1947 থেকে 2017 পর্যন্ত ভারতীয় অর্থনীতির পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল ভারতের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা কমিশন 1951 থেকে 2014 পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল এবং নীতি আয়োগ 2015 থেকে 2017 পর্যন্ত, যার দ্বারা পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাগুলি প্রতিষ্ঠা,পর্যবেক্ষণ বাস্তবায়িত হয়েছিল।কমিশনের একজন মনোনীত ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন যিনি ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হন এবং প্রধানমন্ত্রী পদাধিকার বলে দায়িত্ব পালন করেন। কমিশনের শেষ ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিং আহলুওয়ালিয়া যিনি 26 মে 2014 সালে পদত্যাগ করেছিলেন । এই পরিকল্পনা কমিশনের দ্বাদশ পরিকল্পনার মেয়াদ 2017 সালের মার্চ মাসে শেষ হয়েছিল। 2014 সালে নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তাঁর নেতৃত্বে নতুন সরকার পরিকল্পনা কমিশনকে ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করে এবং এর পরিবর্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার 1 জানুয়ারী 2015 তারিখে নীতি আয়োগ গঠনের ঘোষণা দেয়। 8 ফেব্রুয়ারি 2015-এ নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে নীতি আয়োগের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
Five Year Plans Of India, List of Five Year Plans
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | সময়কাল | উদ্দেশ্য |
প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 1951 – 1956 | ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু সংসদে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা পেশ করেছিলেন। 1951 সালে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছিল, যাতে প্রাথমিক উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। হ্যারড-ডোমার মডেলটি এই প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার জন্য সামান্য পরিবর্তিত হয়েছিল। এই পরিকল্পনায় কৃষিক্ষেত্রের উপর বিশেষ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল এবং শেষ দুই বছরে খাদ্যশস্যের পরিমান প্রচুর বৃদ্ধি পেয়েছিলো ।
|
দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 1956-1961 | ভারতীয় পরিসংখ্যানবিদ প্রশান্ত চন্দ্র মহলানোবিসের তৈরি মহালনোবিস মডেলের উপর ভিত্তি করে 1953 সালে তৈরি করা হয়েছিল দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনায় সরকারি খাতের উন্নয়ন এবং “দ্রুত শিল্পায়ন” কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সর্বাধিক করার জন্য কৌশলটির লক্ষ্য ছিল উৎপাদনশীল খাতের মধ্যে বিনিয়োগের সর্বোত্তম বরাদ্দ খুঁজে বের করা।এই পরিকল্পনাতে ভারতে মিশ্র অর্থনীতি শুরু হয়। |
তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 1961-1966 |
কৃষি ও শিল্পায়ন দুটোই ছিল তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রাধান্য।কিন্তু 1962 সালের চীন-ভারত যুদ্ধের ফলে অর্থনৈতিক ঘাটতি প্রকাশ পায় এবং প্রতিরক্ষা শিল্প ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি মনোযোগ স্থানান্তরিত করে। আবার 1965-1966 সালে ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধও বেঁধেছিলো।এই দ্বন্দ্বের ফলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয় এবং মূল্য স্থিতিশীলতার দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়। |
প্ল্যান হলিডে | 1966-1969 | তৃতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সময়কালে 1965-1966 সালে ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধের ফলে ভারতীয় অর্থনীতিতে চরম বিপর্যয় ঘটে । সে সময় 1966 থেকে 1969 পর্যন্ত এই পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বন্ধ ছিল । তবে 1966 সালে ভারতে সবুজ বিপ্লব দেখা গিয়েছিলো এবং 1969 সালে 14টি ব্যাঙ্কের জাতীয়করণ হয়েছিল। |
চতুর্থ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 1969 – 1974 | চতুর্থ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সময় ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এই পরিকল্পনায় সম্পদ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক শক্তি কেন্দ্রীকরণের পূর্ববর্তী প্রবণতাকে উল্টানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। এটি গাডগিল সূত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল, যা স্থিতিশীল বৃদ্ধির অগ্রগতির উপর জোর দিয়েছিল। |
পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 1974-1979 |
পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কর্মসংস্থান, গরিব হটাও স্লোগানের মধ্যে দিয়ে দারিদ্র্যতা মোচন , এবং ন্যায়বিচার সবই তুলে ধরা হয়েছিল। পরিকল্পনায় কৃষি ও প্রতিরক্ষায় ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।1975 সালে, বিদ্যুৎ সরবরাহ আইন পরিবর্তন করা হয়, যা ফেডারেল সরকারকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালন ব্যবসায় প্রবেশের অনুমতি দেয়। |
রোলিং প্ল্যান | 1978-1980 | সে সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মোরারজি দেশাই। এই প্ল্যানে বছরের শেষে বার্ষিক পরিকল্পনার মূল্যায়নের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিল , যা 1983 সাল পর্যন্ত চালানোর পরিকল্পনা থাকলেও হলেও 1980 সালে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে পুনরায় পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনা চালু করা হয়। |
ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 1980-1985 |
ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উদারীকরণের সূচনা তুলে ধরা হয়েছিল। রেশনের দোকান বন্ধ করে দামের সীমা তুলে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে খাদ্যের দাম এবং জীবনযাত্রার ব্যয় উভয়ই বেড়ে গিয়েছিলো । এই সময়ে নেহরুভিয়ান সমাজতন্ত্রের অবসান ঘটে। শিবরামন কমিটি সুপারিশ করেছিল যে 12 জুলাই 1982 তারিখে গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠা করা হবে। অতিরিক্ত জনসংখ্যা এড়াতে পরিবার পরিকল্পনারও প্রসার ঘটানো হয়েছে। |
সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 1985-1990 |
কংগ্রেস পার্টি সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার নেতৃত্ব দিয়েছিল, সেই সময় রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। পরিকল্পনাটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছিলো। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, খাদ্যশস্য উৎপাদন এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মতো ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করা। |
বার্ষিক পরিকল্পনা | 1989-1991 |
এটি ছিল ভারতে বেসরকারিকরণ ও উদারীকরণের সূচনা। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে কোনো পরিকল্পনা তৈরী হয়নি। |
অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 1992-1997 |
1989-91 সালে ভারতে অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে, কোন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গৃহীত হয়নি। 1990 এবং 1992 এর মধ্যে কেবলমাত্র বার্ষিক পরিকল্পনা ছিল। 1991 সালে, ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্ষয় হয়ে গিয়েছিল,দেশের কাছে মাত্র $1 বিলিয়ন রিজার্ভ ছিল। চাপের ফলস্বরূপ, দেশের সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি পরিবর্তনের ঝুঁকি নিয়েছিল। পি.ভি. নরসিমা রাও ছিলেন ভারতের নবম প্রধানমন্ত্রী এবং কংগ্রেস পার্টির নেতা। তিনি দেশের আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনের তত্ত্বাবধান করেছেন, একটি বিশাল অর্থনৈতিক পরিবর্তনের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি জাতীয় নিরাপত্তা ঘটনা তত্ত্বাবধান করেছেন। সেই সময়ে, ডঃ মনমোহন সিং ভারতের মুক্ত বাজার সংস্কার শুরু করেছিলেন, যা দেশকে প্রায় দেউলিয়া অবস্থা থেকে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করেছিল। ভারতে, এটি উদারীকরণ, বেসরকারীকরণ এবং বিশ্বায়নের সূচনা। |
নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 1997-2002 |
ভারত স্বাধীনের 50 বছর পর নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এসেছিল। সেই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল দেশের সুপ্ত অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৃদ্ধি ঘটানো।এটি ব্যাপক হারে দারিদ্র্যতা দূরীকরণ সম্পন্ন করার জন্য দেশের সামাজিক ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহায়তা প্রদান করেছে।দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সরকারি ও বেসরকারি খাত একসঙ্গে কাজ করেছে। |
দশম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 2002-2007 | এই দশম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূল লক্ষ্যগুলি ছিল 8% বার্ষিক জিডিপি বৃদ্ধি ঘটানো এবং 2007 সালের মধ্যে দারিদ্র্যতার হার 5% কমিয়ে দেশে সাক্ষরতার হার বাড়ানো।সেই সাথে শ্রমশক্তিতে অন্তত সংযোজনের জন্য অর্থবহ এবং উচ্চ-মানের কর্মসংস্থান। |
একাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 2007-2012 |
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর আমলে একাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূল লক্ষ্যগুলি অর্জিত হয়েছিল। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল 2011-12 সালের মধ্যে উচ্চ শিক্ষায় নথিভুক্ত 18-23 বছর বয়সীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা,সামাজিক খাত এবং সেখানে পরিষেবা সরবরাহের উপর জোর, শিক্ষা এবং দক্ষতা বিকাশের মাধ্যমে ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ বৈষম্যের উপর দৃষ্টিপাত ঘটানো, পরিবেশগত স্থায়িত্ব, এবং কৃষি, শিল্প এবং পরিষেবাগুলিতে বৃদ্ধির হার যথাক্রমে 4%, 10% এবং 9% বৃদ্ধি করা। |
দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা | 2012-2017 |
ভারত সরকারের এই দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বৃদ্ধির হার 9% নির্ধারিত ছিল,কিন্তু জাতীয় উন্নয়ন পরিষদ (NDC) 27 ডিসেম্বর, 2012-এ দ্বাদশ পরিকল্পনার জন্য 8% বৃদ্ধির হার গ্রহণ করেছে।সেই সময় ডেপুটি চেয়ারম্যান কমিশন, মন্টেক সিং আহলুওয়ালিয়া বলেছিলেন যে আগামী পাঁচ বছরে গড় বৃদ্ধির হার 9% অর্জন করা বৈশ্বিক পরিস্থিতির অবনতির কারণে অর্জনযোগ্য নয়। দিল্লিতে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের সভায় পরিকল্পনার অনুমোদনের সাথে, চূড়ান্ত বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা 8% নির্ধারণ করা হয়েছিল। এছাড়াও ওই পরিকল্পনায় বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতার লক্ষ্যমাত্রা 88 হাজার মেগাওয়াট যুক্ত করা হয়েছিল। |
Other Study Materials | |
National Income in Bengali-GDP, GNP, and Others | Poverty and Unemployment in India |
ADDA247 Bengali Homepage | Click Here |
ADDA247 Bengali Study Material | Click Here |
Adda247 ইউটিউব চ্যানেল – Adda247 Youtube Channel
Adda247 টেলিগ্রাম চ্যানেল – Adda247 Telegram Channel