Bengali govt jobs   »   study material   »   ভারতীয় সংবিধানের জরুরী অবস্থা

ভারতীয় সংবিধানের জরুরী অবস্থা, (Polity Notes)

ভারতীয় সংবিধানের জরুরী অবস্থা

ভারতীয় সংবিধান দেশের শাসন ব্যবস্থার জন্য একটি কাঠামো প্রদান করে। সংবিধানের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল জরুরি অবস্থার জন্য এর বিধান। এই জরুরী বিধানগুলি সরকারকে কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষমতা প্রদান করে যেগুলি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য যা জাতির নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা বা সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে। এই আর্টিকেলে, ভারতীয় সংবিধানের জরুরী অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবিধানের জরুরী অবস্থার প্রকার

ভারতীয় সংবিধান তিন ধরনের জরুরী অবস্থার রূপরেখা দেয়:

  • জাতীয় জরুরি অবস্থা (আর্টিকেল 352): যুদ্ধ, বহিরাগত আগ্রাসন বা সশস্ত্র বিদ্রোহ দ্বারা ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হলে এই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা যেতে পারে। জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ক্ষমতা ভারতের রাষ্ট্রপতির উপর নির্ভর করে, যিনি মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শে কাজ করেন। একবার জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলে, সরকার 359 আর্টিকেলের অধীনে মৌলিক অধিকার স্থগিত করার ক্ষমতা লাভ করে। তবে, কিছু মৌলিক অধিকার, যেমন জীবন এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার (আর্টিকেল 21), জাতীয় জরুরি অবস্থার সময়ও স্থগিত করা যায় না।
  • রাষ্ট্রীয় জরুরী অবস্থা-রাষ্ট্রপতির শাসন (আর্টিকেল 356): রাষ্ট্রপতির শাসন হিসাবেও পরিচিত, একটি রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা যেতে পারে যখন একটি রাজ্যের মধ্যে সাংবিধানিক সমস্যা হয়। এর অর্থ হল রাজ্য সরকার সংবিধানের বিধান অনুযায়ী কাজ করতে পারছে না, যার ফলে অনাচার বা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাজ্যের গভর্নর সাধারণত রাষ্ট্রপতির কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠান, যার ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি রাজ্যের প্রশাসনের উপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেন।
  • আর্থিক জরুরী অবস্থা (আর্টিকেল 360): যদি ভারতের আর্থিক স্থিতিশীলতা বা ঋণ হুমকির সম্মুখীন হয়, তাহলে রাষ্ট্রপতি আর্থিক জরুরী অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। এই জরুরি অবস্থা রাষ্ট্রপতিকে বিভিন্ন আর্থিক বিষয়ে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা দেয়, কেন্দ্রীয় সরকারকে দেশের আর্থিক সংস্থানগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করার অনুমতি দেয়।

ভারতীয় সংবিধানের জরুরী অবস্থার প্রভাব এবং সুরক্ষা

যদিও জরুরী বিধানগুলি সঙ্কটজনক পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য বোঝানো হয়, তারা সম্ভাব্যভাবে নির্বাহী বিভাগের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করতে পারে এবং জাতির গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করতে পারে। এই ধরনের ঝুঁকি প্রশমিত করার জন্য, ভারতীয় সংবিধানে বেশ কিছু সুরক্ষা ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে:

  • তিনটি ধরনের জরুরী অবস্থার একটি সীমিত সময়কাল আছে। একটি জাতীয় জরুরি অবস্থা অবশ্যই এক মাসের মধ্যে সংসদ দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে এবং এটি সর্বোচ্চ ছয় মাসের জন্য বলবৎ হতে পারে। একইভাবে, একটি রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা প্রতি ছয় মাসে সংসদ দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে।
  • জরুরী অবস্থার সময়, সংসদ কাজ চালিয়ে যায়, এবং কিছু অধিকার স্থগিত করা যায় না, যার মধ্যে অবৈধ আটকের বিরুদ্ধে বিচারিক প্রতিকার চাওয়ার অধিকারও রয়েছে। রাষ্ট্রপতিকে অবশ্যই জরুরি অবস্থার সমস্ত ঘোষণা এবং তাদের প্রত্যাহার পর্যালোচনার জন্য সংসদের সামনে রাখতে হবে।
  • ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জরুরি অবস্থার সময় নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি জরুরি অবস্থা ঘোষণার বৈধতা পরীক্ষা করতে পারে এবং সরকার যাতে তার ক্ষমতার অপব্যবহার না করে তা নিশ্চিত করতে পারে।
  • কিছু মৌলিক অধিকার, যেমন জীবনের অধিকার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, এমনকি জাতীয় জরুরি অবস্থার সময়ও স্থগিত করা যায় না। এটি নিশ্চিত করে যে গুরুতর পরিস্থিতিতেও মৌলিক মানবাধিকার সুরক্ষিত।

WBCS Mahapack PRO

Adda247 ইউটিউব চ্যানেল – Adda247 Youtube Channel

Adda247 টেলিগ্রাম চ্যানেল – Adda247 Telegram Channel

Sharing is caring!

FAQs

জরুরি অবস্থা কত প্রকার?

ভারতীয় সংবিধান তিন ধরনের জরুরী অবস্থার রূপরেখা দেয়।

ভারতীয় সংবিধানের কোন কোন ধারায় জরুরি অবস্থার কথা বলা হয়েছে?

জাতীয় জরুরি অবস্থা (আর্টিকেল 352), রাষ্ট্রীয় জরুরী অবস্থা (আর্টিকেল 356), আর্থিক জরুরী অবস্থা (আর্টিকেল 360)।

ভারতের রাষ্ট্রপতি কত ধরনের জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন?

রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা ভারতের রাষ্ট্রপতি জারি করতে পারেন।